প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন কিভাবে করবেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এর কাজ কি এছাড়া আবেদনের জন্য কী কী লাগবে সাথে সাথে এ্যাপ্লিকেশন ফরম কোথায় পাবেন এসব নিয়ে আপনাদের মনে অনেক কৌতুহল আছে । এ সকল কৌতুহল দূর করার জন্য আপনাদের সামনে সকল তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এর কাজ কি ?
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বাংলাদেশের একটি সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংক। বাংলাদেশ সরকার বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশীদের আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য ২০১০ সালে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ এপ্রিল ২০১১ তারিখে ঢাকায় ৪র্থ কলম্বো প্রসেস কনফারেন্সের সময় এই ব্যাংকের উদ্বোধন করেন।এই ব্যাংকের কাজ হলো বেকার বাংলাদেশী যুবক-যুবতীদের মধ্যে যারা বিদেশে চাকুরী করতে ইচ্ছুক তাদের সহায়তা কর।
আরো জানুনঃ
১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার যোগ্যতা
এছাড়া তাদের প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থান সহায়তা প্রদান এবং তাদেরকে এ দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা। বাংলাদেশী নাগরিকদের দ্রুত এবং সস্তায় টাকা পাঠানো সহজ করতে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন করতে কি কি লাগে । প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে আপনার লোন নিতে প্রয়োজন হবে জাতীয় পরিচয় পত্র এবং বিদেশে ভ্রমণের যাবতীয় ডকুমেন্টস। এছাড়া আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবিও তার মধ্যে থাকতে হবে।
এসবের উপর নির্ণয় করেই আপনাকে ভেরিফাই করা হবে। লোনের ধরনের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হয়ে থাকে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদেরকে মূলত অভিবাসন ঋণ সহ পুনর্বাসন ঋণ, বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ ইত্যাদি সেবা প্রদান করে থাকে।
অভিবাসন ঋণ
কোন ব্যক্তি যদি বৈধ ভাবে বিদেশে যান তাহলে তার বিদেশ যাওয়ার সকল কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সহায়তায় অভিবাসন ঋণ পেতে পারেন।
এ ঋণের ক্ষেত্রে প্রবাসীরা ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। এই অর্থ আপনি ২২ টি কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। যা আপনার জন্য একটা বিরাট সুযোগ হতে পারে।
অভিবাসনের জন্য আপনার যে যে কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- ঋণ গ্রহণ করার জন্য দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছ থেকে সংগ্রহকৃত আবেদন পত্র।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি।
- নাগরিক সনদপত্রও প্রয়োজন হতে পারে।
- আবেদনকারীর দেশের স্থায়ী ঠিকানা সম্বলিত কাগজপত্র।
- পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি ছবি।
- নমিনির সদ্য তোলা ২ কপি পাসপার্স সাইজের ছবি।
- নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
- ভিসা, পাসপোর্ট ও বিএমইটি কার্ডের কপি।
- ঋণ গ্রহণের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তিকে বীমা সুবিধা গ্রহন করতে হবে।
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখায় একটি একাউন্ট।
ঋণ নেওয়ার পর মাসিক কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করতে হয়।
পুনর্বাসন ঋণ
কোন ব্যক্তি যদি একজন বৈধ প্রবাসী হয়ে বিদেশ থেকে একেবারে চলে আসে তবে সেক্ষেত্রে যে ঋণ দেওয়া হয় সেটি হল পুনর্বাসন ঋণ। এক্ষেত্রে যে ব্যক্তি ঋণ নিবেন সে সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে পারবেন।
পুনর্বাসন ঋণের জন্য আপনার যে যে কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও সদ্য তোলা ৩ কপি পাসপোর্টের সাইজের ছবি। জাতীয় পরিচয়পত্র বাদে আপনি চাইলে পাসপোর্টের ছবিও জমা দিতে পারবেন।
- জামিনদারের ভোটার আইডি কার্ডের কপি ও সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।জাতীয় পরিচয়পত্র বাদে আপনি চাইলে পাসপোর্টের ছবিও জমা দিতে পারবেন।
- আবেদনকারী ও জামিনদারের ঠিকানা প্রমাণের জন্য এলাকার চেয়ারম্যান কর্তৃক সনদপত্র
- ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি। যদি না থাকে সেক্ষেত্রে না থাকার কারণ উল্লেখ করতে হবে।
- প্রকল্প বা ব্যবসা করার জন্য কোনো স্থান ভাড়া নেওয়া হলে সে স্থানের ভাড়া বা লীজের চুক্তিপত্রের ফটোকপি।
- প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতার নিজস্ব বিনিয়োগের ঘোষণাপত্র জমা দিতে হবে।
- জামানতকারীর সম্পত্তির ফটোকপি দিতে হবে।
- বিদেশ থেকে প্রত্যাগমন সংক্রান্ত ডকুমেন্টস।
- ঋণ গৃহীতার স্বাক্ষর সহ তার ব্যাংক একাউন্টের ৩টি চেক পাতা।
ভিসার মেয়াদ অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে ঋণ পরিশোধের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০ বছর।ঋণ নেওয়ার পর মাসিক কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ
কোন ব্যক্তি বৈধভাবে বিদেশের চাকরির উদ্দেশ্যে বিদেশে যেতে চাইলে বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।পিতা বা মাতা, সন্তান, ভাই অথবা বোন কিংবা নিকট আত্মীয় কাউকে জামানত হিসেবে দিয়ে বঙ্গবন্ধু অভিবাসী ঋণ নেওয়া যেতে পারে।
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের জন্য আপনার যে যে কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও সদ্য তোলা ৩ কপি পাসপোর্টের সাইজের ছবি।জাতীয় পরিচয়পত্র বাদে আপনি চাইলে পাসপোর্টের ছবিও জমা দিতে পারবেন।
- জামিনদারের ভোটার আইডি কার্ডের কপি ও সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।জাতীয় পরিচয়পত্র বাদে আপনি চাইলে পাসপোর্টের ছবিও জমা দিতে পারবেন।
- ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি। যদি না থাকে সেক্ষেত্রে না থাকার কারণ উল্লেখ করতে হবে।
- প্রকল্প বা ব্যবসা করার জন্য কোনো স্থান ভাড়া নেওয়া হলে সে স্থানের ভাড়া বা লীজের চুক্তিপত্রের ফটোকপি।
- প্রকল্পের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতার নিজস্ব বিনিয়োগের ঘোষণাপত্র জমা দিতে হবে।
- জামানতকারীর সম্পত্তির ফটোকপি দিতে হবে।
- বিদেশ থেকে প্রত্যাগমন সংক্রান্ত ডকুমেন্টস।
- ঋণ গৃহীতার স্বাক্ষর সহ তার ব্যাংক একাউন্টের ৩টি চেক পাতা।
ভিসার মেয়াদ অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে ঋণ পরিশোধের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০ বছর।ঋণ নেওয়ার পর মাসিক কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন কত দিনে পাওয়া যায় । প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন
প্রবাসীদের একটি অভিযোগ আছে ,সেটি হলো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে সহজে লোন পাওয়া যায় না। লোন নিতে প্রবাসীদের হয়রানি হতে হয়। আর লোন পাওয়া গেলেও সেটি অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
কিন্তু আপনি কিছু পদ্ধতি প্রয়োগ করলে অতি দ্রুত প্রবাসী কল্যাণ লোন পেতে পারেন। আপনাকে সকল ডকুমেন্টস সহ ভালো জামিনদার খুঁজে বের করতে হবে।
ভালো জামিনদার বলতে, তিনি হতে পারেন আপনার এলাকার মেম্বার অথবা চেয়ারম্যান কিংবা বড় কোন ব্যবসায়ী যার গ্রহণযোগ্যতা সকলের কাছেই আছে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি মাত্র ৩ দিনের মধ্যেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। এ ব্যাংক থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোনের ক্ষেত্রে কোন জামানত দেওয়া লাগে না।
তবে তিন লক্ষ টাকার উপরে লোন নেওয়ার জন্য ব্যাংকে জামানত প্রদান করতে হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন ফরম
লোন নেওয়ার জন্য আপনার অবশ্যই ফরম পূরণ করতে হবে। আপনাদের সুবিধার জন্য অভিবাসন ঋণ, পুনর্বাসন ঋণ এবং বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের ফরম এর পিডিএফ ফাইল গুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
পুনর্বাসন ঋণ আবেদনের pdf লিঙ্ক
বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ আবেদনের pdf লিঙ্ক
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়
যারা টাকার অভাবে চাকরির জন্য বিদেশ যেতে পারছেন না তাদের কম সুদে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করছে বেশ কয়েকটি ব্যাংক।
এক্ষেত্রে ঋণের টাকায় বিদেশে গিয়ে চাকরি করে কিস্তিতে ঋণ শোধ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক অন্যতম।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হেল্পলাইন
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
প্রধান কার্যালয় প্রবাসী কল্যাণ ভবন
৭১-৭২ ইস্কাটন গার্ডেন রোড, ইস্কাটন, ঢাকা -১০০০
ওয়েব: www.pkb.gov.bd
ই-মেইল: info@pkb.gov.bd
টেলিফোন
প্রধান কার্যালয়, হেল্প ডেস্ক: + ৮৮-০২-৪৮৩২২৮৭৩